Breaking News
Home / সারাদেশ / আগৈলঝাড়ায় বাবেল ফিস বায়োফ্লোক এন্ড হ্যাচারীতে মাছ চাষে রহিম এখন বেকারদের পথ প্রদর্শক

আগৈলঝাড়ায় বাবেল ফিস বায়োফ্লোক এন্ড হ্যাচারীতে মাছ চাষে রহিম এখন বেকারদের পথ প্রদর্শক

বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে নিজেদের বেকারত্ব দূর করে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বরিশালের আগৈলঝাড়ার পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহিম। আব্দুর রহিমের বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারী দেখে এলাকার যুবকেরা মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

আব্দুর রহিমের বায়োফক বা সর্বাধিক ঘন পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রকল্প পরিদর্শণ করে সন্তোষ প্রকাশ করে পৃষ্ঠপোষকতার কথা জানিয়েছেন পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন উপ-পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ।

আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের আশোকসেন গ্রামের রুস্তম আলী মোল্লার ছেলে আব্দুর রহিম। চীনের জিয়াংসু ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার (বিএসসি) ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে দেশে এসে চাকুরীর আশা না করে নিজেই কিছু করার উদ্যোগে হয়। এজন্য এক বছর আগে বরিশাল জেলার বানারীপাড়ার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানা এস.এ বায়োফক এর কাছে তিন মাস প্রশিক্ষন গ্রহণ করে।

প্রশিক্ষন শেষে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারি। বর্তমানে বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করলেও অর্থের অভাবে গড়ে তুলতে পারেনি হ্যাচারী। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ সহায়তা নিয়ে বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য নিজ বাড়ীতে তৈরী করেছেন ২৫ হাজার লিটারের দুটি ‘তারপোলিন ট্যাংক’।

১৫ হাজার লিটারের সিস্টেম ট্যাংক ১টা। এতে চাষ করছেন ৫০ হাজার মাছ। খরচ হয়েছে ১লাখ ৫০ হাজার। মাছ বিক্রি করেছেন ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও হ্যাচারীতে শিং মাছের পোনা উৎপাদন করে বাজারজাত করছেন তিনি।

নিজের ভাগ্য উন্নয়নে আব্দুর রহিম বর্তমানে এলাকার যুবকদের কাছে একজন পথ প্রদর্শক। আব্দুর রহিমের বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারী দেখে এলাকার যুব সমাজ বায়োফক বা সর্বাধিক আধুনিক পদ্ধুতিতে স্বল্প জায়গায় ঘন মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

শনিবার (৭ আগষ্ট) অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে রহিমের বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারী প্রকল্প পরিদর্শণ করেছেন দণিাঞ্চল পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ।

পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার (পিএনসি) আব্দুর রহিম সাংবাদিকদের জানান, বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষে মাছের বর্জ্য থেকে আবার খাবার তৈরি হয়, তাই ২৫ শতাংশ খাদ্যর মাধ্যমে শতভাগ মাছ উৎপাদন করা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় ১ লাখ টাকা খরচের মাধ্যমে ১০ হাজার লিটার পানির দু’টি বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভ হয়।

পরবর্তীতে মাছ ও খাবার ছাড়া অন্য কোন বিনিয়োগ না করার কারণে লাভের অংকটা আরও বেশি হয়। এই হিসেবে যে যতো বড় পানির আধার তৈরি করবেন, তার লাভ তত বেশি হবে। মাছের উৎপাদনের পরিমানও বেশি হবে।

পুকুরে মাছ চাষ করলে কিছু না কিছু ঔষধ প্রয়োগ করায় মাছের প্রাকৃতিক গুণাগুণ নষ্ট হয়ে অনিরাপদ হয়ে ওঠে। কিন্তু বায়োফক পদ্ধতিতে কোন ঔষধ প্রয়োগ না করার কারণে মাছ থাকে নিরাপদ ও প্রাকৃতিক।

এলাকার যুবকদের উদ্যেশ্যে আব্দুর রহিম বলেন, চাকুরির পিছনে না ছুটে শিতি, অর্ধশিতি, অল্পশিতি তরুণ-তরুণীরা এই পদ্ধুতিতে বাড়ির উঠান, বাড়ির ছাদ বা পরিত্যক্ত জমি ব্যবহার করে স্বল্পজায়গায়, অল্প পুঁজিতে পুকুরের চেয়ে কমপে তিনগুণ বেশি মাছ উৎপাদন করা যায়।

আধুনিক এ চাষ পদ্ধতি দেশে সম্প্র্রসারিত হলে মাছের উৎপাদনের পাশাপাশি সমাজের বেকারত্ব দূর হয়ে উন্মোচিত হবে নতুন দিগন্ত। সরকারি সহায়তায় ও পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে আগৈলঝাড়া উপজেলাসহ সারা দেশে বায়োফক পদ্ধতিতে মাছের চাষ ছড়িয়ে দেয়ারও আহ্বান জানিয়ে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মাছ উৎপাদনে বিশ্বের চতুর্থ স্থানে থাকা বাংলাদেশ প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন আব্দুর রহিম।

আব্দুর রহিমের বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারি পরিদর্শন শেষে পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন উপ-পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ প্রকল্প সম্প্রসারণের জন্য সার্বিক সহযোগিতর আশ্বাস প্রদান করে বলেন,

আব্দুর রহিমের মতো বেকার যুবকেরা প্রশিক্ষণ নিয়ে সল্প জায়গায়, অল্প পুঁজিতে আধুনিক পদ্ধুতিতে মাছ চাষ করলে আর্থিকভাবে লাভবান হবার পাশাপাশি সমাজের বেকারত্ব দুর করতে সক্ষম হবে।

About admin

Check Also

সাংবাদিকদের ওপর হামলালাকারী ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

প্রথমধাপের বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *