Breaking News
Home / অন্যান্য / পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য ৮টি আমল

পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য ৮টি আমল

পরীক্ষার সময় এগিয়ে আসলেই ছাত্র-ছাত্রী সহ তাদের অভিভাবকেরাও ভাবনায় পরে যায়।পরীক্ষার ভয়ে অনেকের নানা রকমের সমস্যা তৈরি হয়। খাওয়া ও ঘুমে অনিয়ম শুরু হয়। যার কারনে অনেকে পাড়া জিনিসও ভুলে যায়। এমন অবস্থায় মুক্তি পেতে ইসলামের কয়েকটি নির্দেশনা মেনে চলা যেতে পারে। তাহলে ইনশাহ আল্লাহ এমন প্রতিকূল অবস্থাতে পরতে হবে না।

আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখা: কোনো ব্যক্তি যদি পরীক্ষার ব্যাপারে আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রেখে ঠিক সময়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তাহলে সে ইনশাহ আল্লাহ সফল হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। (সুরা তালাক, আয়াত : ৩)
আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা করার মানে এই নয় যে সে আসবাব ও উপকরণ গ্রহণ না করেই কিংবা পড়ালেখা না করেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার আসায় বসে থাকবে। কেননা আল্লাহ তাআলা দুনিয়াকে দারুল আসবাব তথা উপকরণের কেন্দ্রবিন্দু বানিয়েছেন। তাই আসবাব বা উপকরণ গ্রহণ করতে হবে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকজন হজ করত কিন্তু সঙ্গে পাথেয় নিয়ে আসত না। আবু মাসউদ বলেন, ইয়েমেনের কিছু লোক হজে যেত কিন্তু সঙ্গে পাথেয় আনত না এবং তারা বলত যে আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করেছি। অথচ মক্কায় পৌঁছার পর তারা ভিক্ষা করত। ফলে মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করলেন, ‘তোমরা হজের সফরে সঙ্গে পাথেয় নিয়ে যাবে, আর জেনে রেখো তাকওয়াই হলো উত্তম পাথেয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৭৩০)

বিসমিল্লাহর সহিত শুরু করা : যেকোনো ভালো কাজই বিসমিল্লাহ বলে শুরু করতে হয়। তাই পরীক্ষার্থীরাও প্রশ্নপত্র গ্রহণ করার পর বিসমিল্লাহ বলে তা শুরু করতে পারেন। সঙ্গে দরুদ শরিফও পাঠ করে নিতে পারেন। কারণ কোনো ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর ওপর একবার দরুদ পড়লে মহান আল্লাহ তার ওপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করেন। এবং উত্তরপত্রে লেখা শুরু করার সময় বিসমিল্লাহ বলে শুরু করতে পারেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, যেসব কাজ আল্লাহর নাম না নিয়ে শুরু করা হয়, সেগুলো বরকতশূন্য। কোনো বর্ণনায় আল্লাহর প্রশংসার কথাও বলা হয়েছে।

কঠোর পরিশ্রম : পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন অথবা অন্য কোন কাজের সফলতার জন্য আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসার পাশাপাশি অলসতা ত্যাগ করে নিজের সাধ্যানুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কারণ, আল্লাহ কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষের পরিশ্রম ও চেষ্টার ওপর ভিত্তি করে তাকে সফলতা দিয়ে থাকেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর সবার জন্যই তাদের কর্ম অনুসারে মর্যাদা রয়েছে। আর আল্লাহ যেন তাদেরকে তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিতে পারেন। আর তাদের প্রতি কোনো জুলুম করা হবে না।’ (সুরা আল-আহকাফ, আয়াত : ১৯)

সালাতুল হাজত : পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে ২ রাকাত ‘সালাতুল হাজত’ পড়ে মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে পরীক্ষার জন্য বের হওয়া যেতে পারে। কারণ রাসুল (সা.) যখন কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতেন, তখন ‘সালাতুল হাজত’ বা প্রয়োজন পূরণের নামাজ পড়তেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩১৯)। এই পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সুরা পড়া জরুরি নয়। বরং সাধারণভাবে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নিজ প্রয়োজনগুলো মহান আল্লাহর কাছে পেশ করা ও তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করা।

স্থিরতা অবলম্বন করা : অনেকে আছে পরীক্ষার সময় অস্থির হয়ে পড়েন। অনেক বেশি তাড়াহুড়া করেন। যার কারনে অনেক ক্ষেত্রে ভুল উত্তরও দিয়ে বসেন। ইসলাম তাড়াহুড়া পছন্দ করে না। কারণ এটি শ’য়’তা’নের অভ্যাস।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ধীরস্থিরে কাজ করা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া করা শ’য়’তা’নের পক্ষ থেকে।’ (সুনানে বায়হাকি, হাদিস : ২০৭৬৭)। আর তাড়াহুড়া করার কারণেই কখনো কখনো বান্দার দোয়া কবুল হয় না। অথচ বান্দা আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাইলেই আল্লাহ খুশি হন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, আমি দোয়া করলাম কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না। (বুখারি, হাদিস : ৬৩৪০)

বেশি বেশি দোয়া করা : পরীক্ষায় সঠিক উত্তর প্রদানে মহান আল্লাহর সাহায্যের জন্য মনে মনে তাঁর কাছে দোয়া করা যেতে পারে। যেমন ‘রব্বি জিদনি ইলমা’। মহান আল্লাহ নিজেই তাঁর বন্ধুকে এই দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে। ‘এবং দোয়া করো, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমাকে আরো জ্ঞান দাও। (সুরা ত্বহা, আয়াত : ১১৪)

নকল না করা : নকল করে পরীক্ষায় পাস করা প্রতারণার সমান। মুমিন কখনো প্রতারণার আশ্রয় নিতে পারে না। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে প্রতারণা করে, সে আমার দলভুক্ত নয়। (মুসলিম, হাদিস : ১০২)।
যাকে আল্লাহর রাসুল (সা.) অস্বীকার করবে, সে কী করে সফল হবে? তাছাড়া নকল করার কারণে পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার হল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে, যা তার নিজের জীবনের জন্য খারাপ, তেমনি পরিবারের সম্মানও নষ্ট করবে।

কোনো উত্তর মনে না পড়লে দোয়া: অনেক সময় দেখা যায়, ভালোভাবে মুখস্থ করে যাওয়া জিনিসও মনে পড়ে না। কেউ এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়লে নিম্নোক্ত দোয়া পড়তে পারেন।

উচ্চারণ: ‘রব্বিশরহলি সদরি, ওয়া ইয়াসসিরলি আমরি, ওয়াহলুল উকদাতাম মিল্লিসানি, ইয়াফকহু কওলি।’ অর্থ : ‘সে বলল, হে আমার রব, আমার বুক প্রশস্ত করে দিন। এবং আমার কাজ সহজ করে দিন। আর আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন—যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।’ (সুরা ত্বহা, আয়াত : ২৫-২৮)। এই দোয়া মৌখিক পরীক্ষার সময় বেশি বেশি পড়া যেতে পারে।
এছাড়া আরেকটি দোয়া পড়া যেতে পারে, ‘রব্বি ইয়াসসির, ওয়া লা তুআসসির, ওয়া তাম্মিম আলাইনা বিল খাইর’। অর্থ: হে আমার রব, সহজ করো, কঠিন কোরো না, এবং কল্যাণের সঙ্গে শেষ করার তাওফিক দান করো।

About admin

Check Also

কেকের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মিললো এক অবিশ্বাস্য তথ্য

কেকের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মিললো এক অবিশ্বাস্য তথ্য গায়ক কেকে-র মৃত্যু ‘অস্বাভাবিক’ পরিস্থিতিতে হয়নি বলে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *